সবকিছু শর্টকাটে হয়না। আমরা এখন শর্টকাটে অনেক আচার তৈরী করি, কিন্তু আমাদের নানী-দাদীরা যে সময় নিয়ে, ভালোবাসা নিয়ে, দরদ দিয়ে আচার তৈরী করতেন সেই স্বাদ যেনো এখনো মুখে লেগে আছে। এখন আমি আমার জানা মতে আমের আচারের সবচাইতে পুরাতন রেসিপি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি। যেটা তৈরী করা যত সহজ, খেতেও তত মজার। আপনাদের জেনে আরও ভালো লাগবে যে, আচারটা তৈরী করতে কোনো রান্নার প্রসেস নাই। তবে খাওয়ার জন্য আবার ২০-২৫ দিন অপেক্ষা করতে হবে ☹, অপেক্ষা করতে হলেও সবুরে মেওয়া ফলে 🙂
আচার তৈরী করতে লাগছে –
- সরিষার তেল ২ কাপ (০.৫ লিটার)
- কাঁচা আম ১ কেজি (কাটাকুটি করার আগের ওজন)
- পাঁচ ফোড়ন ১ চা চামুচ
- গোটা শুকনো মরিচ ১০ টি
- হলুদের গুঁড়ি ০.৫ চা চামুচ
- লবণ ১ টেবিল চামুচ
শুকনো মসলার মিক্স তৈরী করতে লাগছে
- গোটা ধনে ১ টেবিল চামুচ
- গোটা জিরা ১ টেবিল চামুচ (এটা শাহী বা মিষ্টি জিরা না)
- পাঁচ ফোড়ন ১ টেবিল চামুচ
- ছোটো এলাচ ২ টি
- দারুচিনি ২ টুকরো
- তেজপাতা ১ টি
- শুকনো মরিচ ৬/৭ টি
সরিষা বাটায় লাগছে
- সাদা/হলুদ সরিষা ২ টেবিল চামুচ
- কাঁচা মরিচ ২ টি
- আদা ৪ টুকরো (আনুমানিক ১৫-২০ গ্রাম)
- সাদা ভিনেগার ০.২৫ কাপ
➡ পাঁচ ফোড়ন তৈরী করা শিখতে এই ভিডিওটি দেখুন
✔ আচারটি টক, টক মিষ্টি, কাঁচা মিঠা সহ যে কোনো আম দিয়ে করা যাবে, আপনি যেমন আম নেবেন, আচারের টেস্ট সেরকমই হবে।
✔ আম যদি খুব বেশী টক হয় তাহলে শুকনো মসলার মিক্স তৈরী করার সময় মরিচের পরিমাণ ও পরে লবণ বাড়িয়ে দিয়ে টক ব্যালেন্স করতে পারেন।
✔ আপনার বাসায় রোদ না আসলে আচারের বৈয়ম রান্নাঘরে চুলা থেকে অন্তত দুই হাত দুরে শুকনো জায়গায় রেখে দেবেন। এতেও আচারটা মজে যাবে, তবে সময় একটু বেশী লাগবে। যেমন ৩৫-৪০ দিন পরে আচারটা খাওয়ার মতো হবে। এই প্রক্রিয়ায় আচার করলে ঢাকনা খোলার দরকার নেই, কারণ সূর্যের আলোতে আচার যত গরম হবে, ঘরের ভেতরে আচার তেমন গরম হবে না।
✔ কাঁচ ছাড়াও আপনারা প্লাস্টিকের বৈয়মে বা এয়ার টাইট বাক্সে আচার করতে পারবেন, সেইক্ষেত্রে BPA Free প্লাস্টিকের বৈয়ম/বাক্স নেবেন। এই বিষয়ে দোকানদারের সাথে কথা বলে নিতে পারেন।
আচার বেশীদিন ভালো রাখতে চাইলে এই প্রসেসগুলি ফলো করুন –
- 🚫 যে কোনো আচার কখনো হাত দিয়ে ধরবেন না।
- 🚫 আচারে কখনো ভেজা চামুচ ঢোকাবেন না।
- 🚫 খাওয়ার জন্য আচার বের করেছেন, কিন্তু খেয়ে শেষ করতে পারেন নাই, সেটা আবার বৈয়মে ঢুকিয়ে রাখবেন না। বরং আলাদাভাবে ফ্রিজে রেখে দিন, পরে খেয়ে ফেলুন।
- 🚫 আচার যে চামুচ দিয়ে তুলবেন, সেটা হাত দিয়ে ধরলে বা মুখে দিলে আবার আচারে ঢোকাবেন না।
- 🚫 আচারে অন্য ব্যবহারি চামুচ ঢোকাবেন না। যেমন তরকারির ঝোল ওয়ালা চামুচ ঢোকাবেন না।
- 🚫 আচার তেলের নীচে থাকলে আর ফ্রিজে রাখার দরকার হয় না।
- 🚫 ফ্রিজে আচার রাখলে, বৈয়ম ফ্রিজে রেখেই ঢাকনা খুলে খাওয়ার জন্য অন্য বাটিতে পরিবেশন করে নিয়ে ঢাকনা বন্ধ করলে আচার বেশী ভালো থাকে। আচারের বৈয়ম যখন ফ্রিজ থেকে বের করে বাহিরে নেবেন, বাতাসের আর্দ্রতায় ঠান্ডা বৈয়ম ও আচার ঘেমে যাবে, পরে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখলে ঐ আর্দ্রতার পানিতেই আচারে ছত্রাক চলে আসবে।
তৈরী করার অভিজ্ঞতা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে শেয়ার করতে ভুলবেন না। শেয়ার করে আপনিও জিতে নিতে পারেন একটি সুন্দর উপহার।
